দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করলে তাকে ছাড়বো না: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: দেশের করোনা পরিস্থিতির এই দুঃসময়ে দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও রকম দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না ‘
তিনি আরও বলেন, ‘দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করলে, কোনও অভিযোগ পেলে আমি কিন্তু তাকে ছাড়বো না।’
মঙ্গলবার সকালে সরকারি বাসভবন গণভবনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের ৬৪ জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
কর্মহীন মানুষকে সাহায্য দিতে গিয়ে লোক সমাগম না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দরকার হলে বাড়ির কাছে গিয়ে সাহায্য পৌঁছে দেবেন। যাতে করে অন্যের মধ্যে করোনার সংক্রমণ না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছুটি ঘোষণার কারণে দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কৃষক, চা শ্রমিক, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। তারা দৈনন্দিন কাজে যেতে পারছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। সেখানে ১০ টাকা কেজি চালসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের কাছে সাহায্য ও খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সবাই যাতে সাহায্য পায়। কেউ যাতে বাদ না পড়ে।’
শেখ হাসিনা বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তা লুকানো যাবে না। এটা লুকোচুরির ব্যাপার নয়। লুকোচুরি করতে গেলে নিজের জীবনটাই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবেন। উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট করাতে হবে। লুকাতে যেয়ে নিজের সর্বনাশ করবেন না, পরিবারের সর্বনাশ করবেন না।
তিনি আরও বলেন, করোনা প্রতিরোধে দেওয়া নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মেনে চলবেন। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সরকারি ও বেসরকারি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের কাছে আমাদের খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সব ধরনের সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, তারা যেন অভুক্ত থেকে না যায়।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর আসন্ন বিশ্বমন্দা কাটিয়ে উঠতে দেশবাসীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী বিশ্ব মন্দা মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। কারো আবাদি জমি ও জলাশয় যেন পড়ে না থাকে। যার যেখানে যতটুকু জমি আছে সেখানে যে যা পারেন চাষ করুন।
পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সেদিকে নজর রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। করোনা পরিস্থিতিতে মুজিববর্ষের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। ৭ মার্চ এবং স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।’
সবাইকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু সমস্যাটা দূর হয়নি। তাই আমাদের সচতেন থাকা দরকার। করোনা দেখা দিলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকার মানুষকে সচেতন হতে হবে। তবে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে গিয়ে যাতে জন সমস্যা সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’