কাউন্সিলে প্রার্থী নিয়ে নতুন চমক আসছে!

223

ঢাকা:  আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বছরের শেষ মাসের ২০ ও ২১ তারিখে সম্মেলনের সম্মতি দিয়েছেন। সে হিসেবে বাকি আর মাত্র ৩ মাসের মতো।

আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ ঘিরেই নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভেতর থাকে মূল আগ্রহ।

আসছে কাউন্সিলেও এর ব্যতিক্রম ঘটছে না। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে নানা জল্পনা। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি আর প্রার্থী হবেন না। তবে সভাপতি শেখ হাসিনা চাইলে দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন।

আওয়ামী লীগের সুপ্রিম পাওয়ার হচ্ছেন শেখ হাসিনা। পার্টিতে বারে বারে যেটা হয় দলের কাউন্সিলরা সবসময় নেতৃত্ব নির্বাচনে নেত্রীর মনোভাবের ওপর সবকিছু ছেড়ে দেন। জেনারেল সেক্রেটারি পদটি পার্টির সুপ্রিমের নির্দেশনায় চলে। এখানে প্রার্থী হওয়ার অধিকার সবার আছে। নেত্রীর ইচ্ছার বাইরে আসলে কিছু হয় না। নেত্রী জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে যাকেই চয়েজ করেন আওয়ামী লীগের কর্মী-কাউন্সিলররা তার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। সে মতে শেখ হাসিনা যাকে পছন্দ করবেন তিনিই সম্পাদক হবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের বেশ সফল এটা সকলেই স্বীকার করবেন। পার্টি প্রধানও সেটা জানেন এবং বেশ সন্তুষ্ট। তবে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে ওবায়দুল কাদেররর শারীরিক বিষয়টি নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন শেখ হাসিনা। শারীরিক দিক বিবেচনায় তাকে যদি এ পদে না আনা হয় তবে কে হবেন তা নিয়েও চলছে জল্পনা-কল্পনা।

এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন বছরে আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের পরিকল্পনা তা সুসম্পন্ন করার জন্য সভাপতির আস্থাভাজন, ডায়নামিক ও নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন সাধারণ সম্পাদক প্রয়োজন। গত কয়েকটি সম্মেলনে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ২০০২ সালের কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়া সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৯ সালের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১২ সালের কাউন্সিলে তাকে পুনঃনির্বাচিত করা হয়। ওই কমিটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরকে ২০১৬ সালের সর্বশেষ কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

আসছে কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানকে নিয়ে জল্পনা চলছে। এ ছাড়া নতুন নেতৃত্বের চমক হিসাবে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাছিমকেও এগিয়ে রাখছেন কেউ কেউ।

সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রাজ্জাক ও দীপু মনি বর্তমান সংসদের এমপি। জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, বি এম মোজাম্মেল হক ও এ এফ এম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তবে তাদের চারজনকেই নির্বাচনী পরিচালনার মতো গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি সম্মেলনেই গড়ে ৩০ ভাগ নতুন মুখ আসছে। জাতীয় সম্মেলনেও নেতৃত্বে অনেক নতুন মুখ আসবে। ভবিষ্যৎ দলের কথা বিবেচনা করেই তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দেওয়া হচ্ছে।’

সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে গুঞ্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘কোনো গুঞ্জনেই কাজ হবে না। দলীয় সভাপতি ছাড়া আর কেউ জানেন না সাধারণ সম্পাদক কে হবেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলররাও এ দায়িত্ব নেত্রীকে দেন। নেত্রী যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই দলের সাধারণ সম্পাদক বানাবেন।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.