এরশাদের আচার-আচরণ অনেক অমায়িক ছিল: প্রধানমন্ত্রী

250

ঢাকা: রেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মানুষ হিসেবে অমায়িক লোক ছিলেন বলে সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘জেনারেল এরশাদের ব্যবহার, আচার-আচরণ অনেক অমায়িক ছিল। মানুষের প্রতি তার দরদ ছিল।’

রবিবার সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতার মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, দোষে গুণে মানুষ। আমাদেরও অনেক কিছুই বলার আছে। কারণ আমরাই সবচেয়ে বেশি ভূক্তভোগী। তারপরও দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে অনেক কিছু হজম করে যাচ্ছি। তিনি প্রয়াত বিরোধীদলের নেতা এরশাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলের নেতা যিনি ছিলেন, সেই জেনারেল এরশাদ এক সময় যখন পাকিস্তান থেকে ফিরে আসেন, তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তাকে সেনাবাহিনীতে যোগদান করান। এক সময় তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান হন।

সংসদ নেতা আরও বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সাভার স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। জেনারেল জিয়া কিন্তু নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিলেও কখনও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেননি। যেটা করেছেন জেনারেল এরশাদ সাহেব। তিনি আসার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অসমাপ্ত কাজ বা সাভার স্মৃতিসৌধের অসমাপ্ত কাজ বা মুজিব নগরের স্মৃতিসৌধ এগুলো তৈরি করেছেনে- এতে কোনো সন্দেহ নাই।

তিনি বলেন, কেউ যদি ভালো কাজ করে নিশ্চয়ই আমরা তা বলব। তাছাড়া আর একটি কাজ এরশাদ সাহেব করেছিলেন-তা হচ্ছে নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে যখন জেনারেল এরশাদের সঙ্গে সংলাপ করি আমাদের ১৪ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে জিয়ার আমলে জারিকৃত মৃত্যুর পরোয়ানা প্রত্যাহার এবং তাদের মুক্তি দেওয়া। তাছাড়া অনেকেই তখন গ্রেফতার হয়ে বন্দী ছিলেন। এরশাদ সাহেব সকলকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এই মুক্তি দেওয়ার মধ্য থেকে তিনি এক একটা পরিবারকে রক্ষা করেছিলেন।

তিনি চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে জনসভায় গুলিবর্ষণসহ এরশাদের আমলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিভিন্ন অত্যাচার এবং তার নিজের কারাবরণের কথাও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে মার্শাল ল’ জারি করে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। এরপর নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতা দখল করে নেন। এই ক্ষমতা দখল প্রথমে জিয়াউর রহমান করেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। এরপর জেনারেল এরশাদও নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চ আদালত জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদের এই ক্ষমতা দখলটাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। উচ্চ আদালত অবৈধ যখন ঘোষণা করেছেন, তখন এ দুজনের কেউ আর সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে কিন্তু থাকেন না। তাদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করাও হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বৈধ নয়, সেটা করা যায় না। কারণ, একটা রায়ের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্রের ধারাটা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.