যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তদের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত

253

নিউইয়র্ক থেকে: যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. ফিরোজ-উল-আমিন (২৯) নামের  এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার সকালে লুইজিয়ানার ব্যাটন রাউজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফিরোজ লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিএইচডি করছিলেন। তাঁর বিশেষায়িত বিষয় ছিল সাইবার সিকিউরিটি। খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ডের অধীনে পিএইচডি করছিলেন তিনি। বাংলাদেশে থাকাকালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিএসই-তে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

পুলিশ জানায়, স্থানীয় একটি গ্যাস স্টেশনে ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেন ফিরোজ। শনিবার সকালে সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় গ্যাস স্টেশনটিতে কর্মরত ফিরোজকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ জানায়, সকালে ডাকাতির উদ্দেশ্যে এক ব্যক্তি যখন গ্যাস স্টেশনটিতে প্রবেশ করে তখন সেখানে একমাত্র কর্মরত ব্যক্তি ছিলেন ফিরোজ-উল-আমিন। ডাকাতির আগে সে ফিরোজকে গুলি করে হত্যা করে।

ফিরোজের পিএইচডি অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড বলেন, সে খুবই ভালো ছাত্র ছিল। খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুর্দান্ত মানুষ ছিল।তিনি বলেন, এটি খুবই বিপজ্জনক ঘটনা। সে এখানে কাজ করতো এটি আমার জানা ছিল না। তিনি জানান, বিয়ের জন্য আসন্ন শীতে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ফিরোজের। বিয়ের পর স্ত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল তার।

ফিারোজের বন্ধুদের একজন মধুপর্ণা মান্না বলেন, গত বছরই বাবাকে হারিয়েছে ফিরোজ। একমাত্র পুত্রসন্তান হিসেবে পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর শিক্ষক এবং বন্ধুরা ফিরোজকে প্রচণ্ড মেধাবী ও চমৎকার একজন মানুষ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড বলেন, সে ছিল আমার সবচেয়ে ভালো ছাত্র। এমনকি অন্যান্য অনুষদের যেসব শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলেছে, তারাও তার দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল।

ফিরোজের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট এফ. কিং আলেক্সান্ডার। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. ফিরোজ-উল-আমিন-এর মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটি শোকাহত। সে ছিল অবিশ্বাস্য রকমের একজন মেধাবী ছাত্র ও গবেষক; যার একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ ছিল।

ফিরোজকে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচিং অ্যাসিট্যান্টশিপের জন্যও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। শিগগিরই তিনি এ দায়িত্ব নেবেন বলে মনে হচ্ছিল। 

Leave A Reply

Your email address will not be published.