১৫০ নেতাকে শোকজ করা হচ্ছে

279

ঢাকা: ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করায় অন্তত দেড়শ’ নেতাকে শোকজ করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজ রোববার থেকে এই শোকজ নোটিস অভিযুক্ত নেতাদের কাছে পাঠানো হবে।

গতকাল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বালিশ কান্ড এবং ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজে পর্দা ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়কে ‘ছিঁচকে’ অপকর্ম আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বালিশ কান্ড, পর্দা ক্রয় এ ধরনের ছিঁচকে কাজ যারা করেন তারা নিশ্চয়ই কোনো এমপি বা মন্ত্রী নন। এটা হাওয়া ভবনের মতো লুটপাটের বিষয় নয়। দেশটাকে লুটপাট করে খেয়েছে হাওয়া ভবন। হাওয়া ভবন ছিল তখন খাওয়া ভবন। আমাদের সময়ে লুটপাটের জন্য কোনো ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র তৈরি হয়নি। এটা আমি দাবির সঙ্গে বলতে পারি। বালিশ আর পর্দাকে হাওয়া ভবনের সঙ্গে মেলানো যাবে না। আওয়ামী লীগের ১৫০ নেতাশোকজ নোটিস পাচ্ছেন জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় যারা দলের প্রার্থী ও দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিলেন, তাদের শোকজ করার সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে। সেটা বাস্তবায়নের প্রসেস কীভাবে দ্রুত করা যায়, সেটা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রোববার থেকে ১৫০টির মতো শোকজ নোটিস তৈরি হবে। শোকজের জবাবের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তিন সপ্তাহ সময় দেয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্রোহী হতে দলের যারা সিনিয়র নেতা, কেন্দ্রীয় নেতা বা সংসদ সদস্য-মন্ত্রী, মদদদাতারা ভূমিকায় ছিলেন তাদের শোকজ করা হবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকন্দ্রে বালিশ ও ফরিদপুর মেডিক্যালের পর্দা কেনার দুর্নীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সরকারের ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের ছিঁচকে কাজগুলো যারা করে, তারা মন্ত্রী-এমপি নন। এখানে তো হাওয়া ভবনের মত লুটপাটের বিষয় নেই। যারা এমন অভিযোগ করে, তারা তো দেশটাকেই লুটপাট করে খেয়েছে। এখন কিন্তু সরকারের কোনো বিকল্প সেন্টার নেই। লুটপাটের কোনো ভবন এই সরকারের আমলে নেই, এটা আমি দাবি করে বলতে পারি।

‘জাতীয় পার্টির বিভক্ত দুই গ্রুপ আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে রয়েছে’ এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে এক সময় আমাদের জোট ছিল। তাদের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী জোট থাকলেও আদর্শিক কোনো ঐক্য নেই। এখন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল। সত্যিকার অর্থে তারা বিরোধীদল হিসেবে শক্তিশালী থাকুক এটা আমরাও চাই। বিরোধী দল নিজেরাই যদি নিজেদের দ্ব›েদ্ব দুর্বল হয়ে যায়, এখানে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা চাই এটা তারা নিজেরাই মীমাংসা করুক। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো দায়িত্ব নেই। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর তো দরকার নেই। জাতীয় পার্টিতে কি হয়েছে, আমাদের দেখার বিষয় নয়। জাতীয় পার্টি তো আওয়ামী লীগের কোনো শাখা সংগঠন নয়, যে এটা আওয়ামী লীগকে দেখতে হবে। এটা তাদের বিষয়, তারাই দেখবে।

পুলিশের ওপর একাধিকবার হামলার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নীতি-নির্ধারক বলেন, জঙ্গি তৎপরতা একেবারে থেমে গেছে এমন দাবি আমরা করব না। ছোটখাট যে ঘটনাগুলো ঘটছে এগুলো বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে হলেও ওরা হয়তো টেস্ট কেস করছে। বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটনানোর জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বি এম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.