‘জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আওয়ামী লীগ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবে’

248

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে। জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তি। ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবে।

শনিবার (২২ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিপুলভাবে বিজয়ী করেছে। জনগণকে দেওয়া প্রতিটি ওয়াদা আমরা বাস্তবায়ন করব।’

কোনো অশুভ শক্তি এ দেশে বিস্তার লাভ করতে পারবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সফল হয়েছি। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের স্থান বাংলাদেশে হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী অপশক্তির মূলোৎপাটন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমি বিশ্বাস করি, এ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে গিয়ে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত করবে।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের অগণিত নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকসহ অন্য নেতাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং জাতীয় চার নেতাসহ স্বাধীকার আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ গণমানুষের এক সুবৃহৎ সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের এই পাঁচ বছরের শাসনামল জাতীয় ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’

‘বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন, দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে পুনরায় বিজয় অর্জন করে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার গত সাড়ে ১০ বছরে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৮৬ শতাংশে। এবার হবে ৮ ভাগের উপরে। দারিদ্র্যের হার কমে এখন ২১ শতাংশ। মানুষের আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলার। দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ৫ কোটির বেশি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।’

জনগণকে দেওয়া প্রতিটি ওয়াদা বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০-২০২১ সালে মুজিব বর্ষ এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন করা হবে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করব।’ সমৃদ্ধির এ অগ্রযাত্রায় দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.