আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা

407

ঢাকা: সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৮ মে। ভোট ১৬ জুন। তবে একটি আসনে একক প্রার্থী থাকায় আর ভোট হবে না। সে ক্ষেত্রে রুমিনের মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় এবং তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ২৮ মে তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

তবে রুমিনের মনোনয়ন নিয়ে সারাদেশে যে আলোচনা হচ্ছে তার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে বিএনপির এত নারী নেত্রী থাকতে রাজনীতির মাঠে অনেকটাই অপরিচিত রুমিনকে কেন মনোনয়ন দিয়েছে বেএনপি?

এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায়। নিপুণের পাশাপাশি সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন নিয়ে বেশ আলোচনায় ছিলেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। ভাবা হচ্ছিলো রাজপথে লড়াই-সংগ্রামে এগিয়ে থাকা কাউকে হয়তো বসানো হবে সংরক্ষিত নারী আসনে।

এরপরও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে কেনো মনোনয়ন দেওয়া হলো এটা নিয়ে চুল ছেড়া বিশ্লেষণ হচ্ছে দলের নারী নেত্রীদের মধ্যে।

বিএনপির রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের বলেন, কেবল মাত্র বাক পটুতার কারণেই রুমিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

তার মতে, রুমিন ফারহানা তার নিজ নির্বাচনী আসনের (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) মানুষের কাছেও তেমন পরিচিতি নন। সম্প্রতি কিছু টেলিভিশন টকশো আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া একজন নেত্রী তিনি।

রাজনীতির মাঠে সক্রিয়দের বাদ দিয়ে এধরণের নেত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসালে অন্যরাও রাজপথ বাদ দিয়ে টকশো আর সামাজিক মাধ্যম কেন্দ্রীক হয়ে পড়বে।

তিনি মনে করেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে বন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসতে পারছেন না। এই মুহুর্তে গণতন্ত্রের মাকে মুক্ত করা, সব ষড়যন্ত্র ভেঙে তারেক রহমানকে দেশে আসার পরিবেশ সৃষ্টি করা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে রাজপথে লড়াই-সংগ্রামের বিকল্প নেই।

আবার বিএনপির অনেকেই মনে করছেন অন্যদের চেয়ে ব্যারিস্টার রুমিন অনেক যোগ্য। তিনি প্রয়াত ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদের মেয়ে। এই মুহূর্তে সংসদে দলের কথা বলার জন্য তার চেয়ে যোগ্য প্রার্থী অন্য কেউ হতে পারে না। সেই বিবেচনায় দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে।

সাপ্তাহিক ইত্তেহাদের সম্পাদক অলি আহাদের ডেমোক্রেটিক লীগ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোটে ছিল। দলটি এখনও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক। তবে রুমিন এই দলের রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তাকে বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিলে দলের সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক করা হয়। পাশাপাশি দলটির কূটনৈতিক শাখার সদস্যও করা হয়।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচনে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, সংসদে আমরা সীমিত সুযোগ পাবো, সেই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার আমরা করবো। আমরা সোচ্চার থাকবো এবং প্রতিদিনের যে অনিয়ম-অনাচার, জনগণের দুর্ভোগ, মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবো।

চলতি সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৪৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪৩ জন, জাতীয় পার্টির চারজন, ওয়ার্কার্স পার্টির একজন ও স্বতন্ত্র একজন রয়েছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.