টক অব দ্য কমিউনিটি : নিউইয়র্কে ‘জাগো বাংলাদেশ’র নেতার সাথে বিএনপি মহাসচিব?

386

সেই ‘জাগো বাংলাদেশ’র এক নেতার সাথে বিএনপি মহাসচিবের বৈঠক এবং তাকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সংবাদে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সংগঠকদের মধ্যে। ১১ দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুলের রহস্যজনক আচরণে নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্যে সিঙ্গাপুর থেকে এসেছিলেন তিনি। ১৭ ফেব্রুয়ারি ফিরে গেছেন ঢাকায়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত সে সংবাদে যুক্তরাষ্ট্র সফরের তেমন কোন তথ্য দেয়া হয়নি। এর ফলে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

শুধু তাই নয়, লন্ডনে নির্বাসিত জীবন-যাপনকারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজনেরাও টেলিফোন করে এনআরবি নিউজের কাছে হতাশা ব্যক্ত করেছেন গোপন এই সফর নিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন নেতা মন্তব্য করেছেন, এখন বিলাস ভ্রমণের সময় নয়। এখন হচ্ছে ম্যাডামকে কারামুক্ত করতে আন্তর্জাতিক জনমত সুসংহত করার সময়। এমনি অবস্থায় নিউইয়র্কে ‘জাগো বাংলাদেশ’র এক নেতাকে হোটেলে নিয়ে বৈঠকের সংবাদ প্রবাসী নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ক্ষেপিয়ে তোলেছে। বহুল আলোচিত ১/১১ পরবর্তী সময়ে দুই নেত্রীকে জেলে নিয়ে সে সময়ের ক্ষমতাসীনদের পৃষ্টপোষকতায় ‘জাগো বাংলাদেশ; গঠিত হয়। তবে জনসমর্থন না পাওয়ায় পরবর্তীতে তা বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে, দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের সংবাদ জানাজানি হলে মীর্জা ফখরুল কমিটিহীন বিএনপির ৭ নেতাকে ডেকেছিলেন তার হোটেলে। সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীরাও সন্তুষ্ট নন। সকলেই বলেছেন যে, তৃণমূলের সাথে সভায় মিলিত হওয়া উচিত ছিল মহাসচিবের।

নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার সাথে মীর্জা ফখরুল। ছবিতে বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিনকেও দেখা যাচ্ছে। ছবি-ফেসবুক থেকে।

‘গত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে নীতি-নির্দ্ধারকদের সীমাহীন ব্যর্থতা এবং বহুল বিতর্কিত ঐ নির্বাচনের পরও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ না দেখিনি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে সবসময় অবমূল্যায়নের প্রতিবাদে আমি বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছি’-এসব কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুৃল লতিফ স¤্রাট।

‘গণতন্ত্রের প্রতিক বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের বর্ষপূর্তির দিনের কর্মসূচি বাতিল করে চিকিৎসার নামে সিঙ্গাপুর গিয়ে সেখান থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি গোপনে ওয়াশিংটন ডিসিতে এসেছেন মীর্জা ফখরুল। গোপন কথাটি প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের স্বস্তি দেয়ার অভিপ্রায়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে নিউইয়র্কে বিলাসবহুল এক হোটেল-স্যুইটে ৭ নেতাকে ডেকেছিলেন ফখরুল। সেটিও ছিল গোপন ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক। তাহলে বিএনপি কি নিষিদ্ধ কোন রাজনৈতিক দল’-এনআরবি নিউজের কাছে ১৬ ফেব্রুয়ারি এমন মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী।

ফখরুলের ঐ বৈঠকে সাড়া দেননি স¤্রাট এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক ডা. মজিবর রহমান মজুমদার। ৫ জন সাড়া দিয়েছিলেন। এরা হলেন গিয়াস আহমেদ, শরাফত হোসেন বাবু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবূল, জিল্লুর রহমান এবং জসীম ভ’ইয়া। তাদের বৈঠকের সময় মিল্টন ভ’ইয়া নামক অপর এক নেতা ছবি উঠালে ক্ষেপে যান ফখরুল। এক পর্যায়ে সেই ছবি ডিলিট করা হয় বলে বৈঠকে অংশগ্রহণকারিরা এ সংবাদদাতাকে জানান। এ বৈঠকে আমন্ত্রিতদের বাইরে আরো ছিলেন বিএনপি নেতা মাকসুদ এইচ চৌধুরী, রকিবউদ্দিন দুলাল, আবু সাঈদ আহমেদ, এম এ সবুর প্রমুখ। বৈঠকে অংশগ্রহণকারিদের অন্তত: দু’জন নাম গোপন রাখার শর্তে আরো জানান, ‘লন্ডনের গ্রীণ সিগন্যাল রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণার। এজন্যেই ফখরুল শীর্ষনেতাদের সাথে কথা বললেন। ঢাকায় ফিরেই নতুন কমিটি দেবেন।’ ‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন প্রবাস থেকেই জোরদারের আহবান জানিয়েছেন ফখরুল। কারণ বাংলাদেশে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রাণের ভয়ে কেউই রাস্তায় নামতে সাহস পাচ্ছে না’-ফখরুল উল্লেখ করেছেন বলেও নেতারা জানান।

বৈঠকে অংশ নেয়া এক নেতা জানান, ‘নির্বাচনে ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে লাগাতার ধর্মঘটের কর্মসূচি কেন দেয়া হচ্ছে না’-এমন এক প্রসঙ্গে ফখরুল বলেছেন, ‘সেটি সম্ভব নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অধিক বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে। তারা এমন কর্মসূচিকে পছন্দ করছে না। সবদিক ভেবেই এগুতে হচ্ছে। তাই হতাশ হবার কোন কারণ নেই। বিএনপি অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে আগের মতোই’।

২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এরপর মীর্জা ফখরুল কয়েক দফা যুক্তরাষ্ট্রে এসে নতুন কমিটির আশ্বাস দিলেও বাস্তবে সেটি ঘটেনি। এজন্যে অধিকাংশ নেতা-কর্মীই ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। সকলেই লন্ডনে তারেক রহমানের নির্দেশের অপেক্ষা রয়েছেন। ‘এটি অবহিত হবার পরই ফখরুল এই ৫ নেতাকে জানিয়েছেন যে, নতুন কমিটির ব্যাপারে লন্ডনের গ্রীণ সিগন্যাল রয়েছে’-জানান ঐ বৈঠকে উপস্থিত বিলুপ্ত কমিটির এক নেতা।

ফখরুলের আমন্ত্রণ প্রত্যাখানকারি স¤্রাট ক্ষোভের সাথে এনআরবি নিউজকে আরো বলেন, ‘বিগত দিনে এই যুক্তরাষ্ট্রের নেতা-কর্মীরা অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন। কখনোই ন্যূনতম ম্যলায়ন করা হয়নি। এমনি অবস্থায় ২০১১ সালে আমার নেতৃত্বাধীর কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়। এরপর ৮ বছর অতিবাহিত হচ্ছে, নতুৃন কমিটি দেয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটি হয়েছে, কিন্তু একজনকেও নেয়া হয়নি যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অতি সম্প্রতি বৈদেশিক বিষয়ক একটি কমিটি ঘোষিত হলো, সেখানেও নেই যুক্তরাষ্ট্রের কেউ।’

ওয়াশিংটনে ‘৬৭তম বার্ষিক ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন মীর্জা ফখরুল। সে অনুষ্ঠানে শতাধিক দেশের সহ¯্রাধিক লোক অংশ নেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেখানে বক্তব্য দিয়েছেন। ছিলেন সিনেটর, কংগ্রেসম্যানরাও। তবে ঐ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের কোন পর্যায়ের কর্মকর্তার সাথেই ফখরুলের সাক্ষাত ঘটেনি বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির একজন নেতা। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং বিভিন্ন এলাকা পরিভ্রমণ করেছেন ফখরুল। ‘তার ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়কে নিয়ে নিতান্তই বিলাসবহুল ঘোরাফেরা করার ঘটনাটি জানাজানি হলে তৃণমূলের কর্মীরা ক্ষেপে উঠেন। এথেকে পরিত্রাণের জন্যেই ৭ নেতাকে ডেকেছিলেন হোটেল স্যুইটে’-উল্লেখ করেন নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির নেতা সাঈদ।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন এ প্রসঙ্গে এ সংবাদদাতাকে আরো জানান, গত বছরও এসেছিলেন ঝটিকা সফরে। জাতিসংঘের নি¤œস্তরের এক কর্মকর্তা এবং মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেস্ক অফিসারের সাথে বৈঠক করেছিলেন। সে সময় মির্জা ফখরুল যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কাউকে পাত্তা দেননি। এমনকি এক পর্যায়ে বলেছিলেন যে, ‘এদেশে বিএনপি করার দরকার কী?’ এভাবেই তিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নে সীমাহীন কার্পণ্য করেছেন।’

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির আরেক নেতা ও মার্কিন ডেমক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক আকতার হোসেন বাদল ক্ষোভের সাথে এনআরবি নিউজকে বলেন, ‘ম্যাডাম জেলে। তার মুক্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সোচ্চার হবার ক্ষেত্রে নিউইয়র্কে বিএনপির তৎপরতার বিকল্প নেই। সে তাগিদেই যোগ্য নেতাদের সমন্¦য়ে নতুন কমিটির প্রত্যাশা রয়েছে। কিন্তু সেটি না করে মাত্র ৫ জনকে নিয়ে মির্জা ফখরুল বৈঠকের নামে যা করলেন তা আরো হতাশ করবে সকলকে।’ বৈঠকে ছিলেন গিয়াস আহমেদ, শরাফত হোসেন বাবু, জিল্লুর রহমান, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল এবং জসীম ভ’ইয়া।

এমপি পদে দলীয় মনোনয়নের জন্যে বাংলাদেশে বেশ কয়েক সপ্তাহ অবস্থানের পর গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে ফেরা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির আরেক নেতা আলহাজ্ব সোলায়মান ভ’ইয়া এ সংবাদদাতাকে অত্যন্ত হতাশার সাথে জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপির সাথে রয়েছি। কত অর্থ, কম সময় আর মেধার বিনিয়োগ ঘটিয়েছি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আন্তরিকতার সাথেই সবকিছু করেছি। কিন্তু ইদানিং ম্যাডামের অনুপস্থিতিতে এমন কিছু কান্ড-কারখানা চলছে যা বিএনপির ভবিষ্যতকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এই প্রবাসেও হতাশায় আক্রান্ত হয়েছেন। মহাসচিব পারতেন এই হতাশা কেটে উঠাতে। কিন্তু তিনি সে উদ্যোগ নেননি।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা ও তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ বলেন, ‘কংগ্রেসে ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান ও এশিয়া এ্যান্ড প্যাসিফি অঞ্চলের চেয়ারম্যানসহ ৬ কংগ্রেসম্যান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে। এ ঘটনার পরও মীর্জা ফখরুল পারেননি ঐ কংগ্রেসম্যানদের সাথে সাক্ষাৎ করে ধন্যবাদ জানাতে। এটি দলগতভাবে বিএনপির যেমন ব্যর্থতা, মহাসচিব হিসেবে মীর্জা ফখরুলের জন্যে তা হচ্ছে চরম ব্যর্থতা।’ ‘২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক ঢাকার শাপলা চত্বরের বিশাল ঘেরাও কর্মসূচির সময় ম্যাডাম ঢাকাবাসীকে রাস্তায় নামার যে আহবান জানিয়েছিলেন, সে সময় বিএনপির নেতারা যদি আন্তরিক অর্থে তা পালনে সোচ্চার হতেন, তাহলে ঐ সময়ই হয়তো বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পাল্টে যেত। কেন কেন্দ্রীয় নেতারা ঐ আহবানে সাড়া দেননি-এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলেই দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা নেতাদের আসল চেহারার বহি:প্রকাশ ঘটে এবং মহাসচিবের এই সফরেও তার ইঙ্গিত মেলেছে’-মন্তব্য বিএনপির এই নেতার। ‘১৬ ফেব্রুয়ারির বৈঠকটি হওয়া উচিত ছিল তৃণমূলের সকলকে নিয়ে। তাহলেই সকলে উজ্জীবিত হতেন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে’-উল্লেখ করেন পারভেজ সাজ্জাদ।

যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ বাতিন এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম ফারুক শাহীন পৃথক পৃথকভাবে এনআরবি নিউজকে বলেন, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরদার করার স্বার্থেই মির্জা ফখরুলের উচিত ছিল সকলকে নিয়ে একটি কর্মী সভা করার। তা না করে গোপনে ৫ জনের ঐ বৈঠকে দলীয় কোন্দল-বিভক্তিকে আরো উষ্কে দেয়া হলো।’

মাকসুদ এইচ চৌধুরী ঐ বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, প্রবাসী নেতারা মীর্র্জা ফখরুলকে অনুরোধ করেছেন সিনিয়রদের কেন্দীয় কমিটিতে এবং অতি সম্প্রতি পুনর্গঠিত বিদেশ বিষয়ক কমিটিতে নিয়ে অধিকতর যোগ্যদের নেতৃত্বে যেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেয়া হয়।

এদিকে, হোটেল কক্ষে কথিত জাগো বাংলাদেশ’র যুক্তরাষ্ট্র শাখার প্রধানের সাথে বৈঠকের সংবাদে সকলেই ক্ষুব্ধ। এ প্রসঙ্গে ‘জাগো বাংলাদেশ’ থেকে ঐ সময়েই পদত্যাগী নেতা ডা. মাসুদুর রহমান এ সংবাদদাতাকে বলেন, মীর্জা ফখরুলের সাথে আমার আত্মীয়তার একটি সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে সাক্ষাৎ ঘটেছে। তবে অনেক আগে থেকেই আমাকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণের আহবান জানানো হচ্ছে। আমি সম্মত হইনি। কারণ, কোন ধরনের রাজনীতির সাথে জড়ানোর আগ্রহ একেবারেই নেই।

‘তাহলে জাগো বাংলাদেশে জড়িয়েছিলেন কেন-এ প্রশ্নে ডা. মাসুদ বলেন, সেটি কোন রাজনৈতিক দল হবে না বলে পূর্বাহ্নে আমাকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে যখন দেখেছি যে, তারাও রাজনৈতিক ডামাডোলে বিশ্বাসী, তখোনই আমি পদত্যাগ করেছি। ডা. মাসুদ এ সময় উল্লেখ করেন, প্রকৃত অর্থেই উচ্চ শিক্ষিত এবং সমাজে ভালো মানুষ, মূলধারাতেও কানেকশন রয়েছে-এমন একজনকে বিএনপির হাই কমান্ড খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্বে। সম্ভবত: এ কারণেই দীর্ঘদিন যাবত নতুন কমিটি অনুমোদন আসছে না।

১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেছেন মীর্জা ফখরুল। তিনি ঢাকায় ফেরার পর বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং থেকে শায়রুল কবীর খান গণমাধ্যমে জানিয়েছেন যে, সিঙ্গাপুর থেকে ওয়াশিংটনে এসেছিলেন একটি সেমিনারে যোগদানের জন্যে। তবে সেটি কোথায় হয়েছে, কী ভ’মিকা ছিল মীর্জা ফকরুলের সে হদিস পাননি ওয়াশিংটনে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও। তারা বলেছেন, বিএনপি তো নিষিদ্ধ কোন রাজনৈতিক দল নয়। তাই মহাসচিব যদি কোন সেমিনারে অংশ নেন, তাহলে সেটি গোপন রাখার প্রয়োজন কেন? তবে, নিউইয়র্কে চিকিৎসারত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সাথে এবারও মীর্জা ফখরুল সাক্ষাত করেছেন। সেটি ছিল নিতান্তই সৌজন্য সাক্ষাত বলে খোকার ঘনিষ্ঠজনেরা উল্লেখ করেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.