জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার দাবিগুলো অসাংবিধানিক: ওবায়দুল কাদের
ঢাকা: জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার গঠন, বিচারিক ক্ষমতায় দিয়ে সেনা মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠনে দাবিকে অপ্রাসঙ্গিক, অবান্তর, অপ্রয়োজন ও অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার করার তো প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে আমাদের দেশে। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী, এর বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নাই। এই মুহুর্তে সংসদ ভেঙে নির্দলীয় সরকার গঠন, বিচারিক ক্ষমতায় দিয়ে সেনা মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠনের দাবি অপ্রাসঙ্গিক, অবান্তর, অপ্রয়োজন ও অসাংবিধানিক।
রবিবার দুপুরে ইনস্টিটউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স (আইডিইবি) কাউন্সিল হলে সংগঠনটির ৪১তম কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এক দেড়মাস বাকি আছে। এখন মামাবাড়ির আবদার করলে তো চলবে না। সংসদের শেষ অধিবেশন অক্টোবর মাসের ২০ তারিখের আগেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর আর সংসদ বসবে না নির্বাচন পর্যন্ত। এ সংসদ সদস্যদের কোন ক্ষমতা ও কার্যকরিতা থাকবে না। কাজেই এটা ভেঙে দেয়া, গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো রেখে এবং অকার্যকর এর মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়, আমি বুঝতে পারি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বিকল্প কি? আমাদের বিকল্প হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। যাদের দুঃশাসনে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অত্যাচার, নির্যাতন করেছে, বাল্ডি পলিটিক্সি ছিল। সেই নির্যাতন অন্ধকারে কি কেউ ফিরে যেতে চান? আমরা মনে করি না। আমাদের সবকিছু শুদ্ধ, আমাদের ভুলত্রুটিও আছে, কিন্তু ভুল ত্রুটি সংশোধনের সৎসাহস শেখ হাসিনার রয়েছে। দলের মধ্যে কেউ অন্যায় করলে তাকে আমরা শাস্তি দেই। কিন্তু আমাদের বিকল্প যারা ভাবেন, তারা তো নিজেদের লোকদের শাসন করেন নাই।
যুক্তফ্রন্টের পাঁচ দফা বিএনপির দাবির সঙ্গে মিলে গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা মিলে গেল কিনা, তা দেখা আমাদের কোন বিষয় না। বিএনপি কার সঙ্গে যাবে, কিভাবে যাবে তা আমাদের বিষয় না। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যুক্তফ্রন্টের নেতারা বলেছেন বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াতে ইসলামী থাকলে তারা বিএনপির সঙ্গে যাবে না। এখানে তো আমাদের কোন মন্তব্য নাই। তবে নতুন নতুন জোট হলে স্বাগত, শত ফুল ফুটুক। গণতন্ত্র তো, অসুবিধা নাই। নতুন নতুন জোট হোক নির্বাচন করুক।
বিএনপি মহাসচিবের যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাহস থাকলে জনগণের কাছে নালিশ করুন। বিদেশে গিয়ে নালিশ করে দেশকে কেন খাটো করছেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণ, বাস্তবে দেখা গেলো এমন কোন আমন্ত্রণ নাই। কি রকম তারা প্রতরণা করে, রাজনীতে ছদ্মবেশী প্রতারণা পার্টির নাম বিএনপি। বিএনপি এখন বিদেশীদের কাছে কান্নাকাটি পার্টি হয়ে গেছে।
বিএনপি নির্বাচনে না আসলে যুক্তফ্রন্টই বিএনপির বিকল্প কিনা সাংবাদিকদের এমন লিখিত প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা আমরা জানি না। তবে আমরা জানি বিএনপি না এলেও এবার প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাব নাই, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফাঁদ তৈরির কোন সুযোগ নাই। সবাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই এবার নির্বাচিত হবে।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে নির্বাচনের দাবির প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমরা কি যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, আমরা কি সাউথ সুদান, কঙ্গো, ইরাক, আমরা কি জিম্বাবুয়ে? বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন পরিচালিত হবে। এখানে কোন ব্যতয় করার সুযোগ নাই। শেখ হাসিনা সরকারই তত্ত্বাবধান করবে এবং নির্বাচন কমিশনই এ নির্বাচন পরিচালনা করবে।
আইডিইবির সভাপতি এ কে এম হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান।