সেই তামিমির ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলের
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক ফিলিস্তিনি তরুণী অহেদ তামিমি ও তার পরিবারের ওপর বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তেল আবিব। ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রায় দুই মাস পর এ নিষেধাজ্ঞা দিল ইসরায়েল। ইসরায়েলের এক সেনাকে থাপ্পড় মারার জন্য তাকে আট মাস জেল খাটতে হয়েছে।
তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে শুক্রবার তামিমির বাবা বাসিম তামিমি বলেন, তার পরিবার জর্দান হয়ে ইউরোপ সফরের পরিকল্পনা করেছিল। এ সফরে তাদের ফিলিস্তিনি আন্দোলন নিয়ে কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে যে, ইসরায়েলকে না জানিয়ে তামিমির পরিবার বিদেশ সফর করতে পারবে না।
বাসিম তামিমি জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালেই তাদের ইউরোপ সফরে বের হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অহেদ তামিমি ইরান সফরেরও পরিকল্পনা করেছিলেন।
ইরানের ইংরেজি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল প্রেসটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অহেদ তামিমির বাবা বলেছেন, তার মেয়েকে ইসরায়েল বিদেশ সফরের ব্যাপারে এই ভয়ে বাধা দিয়েছে যে, তারা মনে করে ইসরায়েলের শত্রুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করে অহিদ তামিমি মধ্যপ্রাচ্যকে খণ্ডবিখণ্ড করা সংক্রান্ত ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেবে।
অহেদের বাবা আরও বলেন, তার মেয়েকে ইসরায়েল বিদেশ সফরের বিষয়ে বাধা দিচ্ছে এই কারণে যে, অহেদ তামিমি মানবতার জন্য একজন অ্যাম্বাসাডর হয়ে গেছে এবং তার প্রতি তেল আবিবের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সহানুভূতিকে ইসরায়েল ভয় পায়।
গত ডিসেম্বর মাসে অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলের সেনারা আটক করেছিল ফিলিস্তিনের ১৭ বছর বয়সী এ তরুণীকে। সে সময় তামিমি ইসরায়েলের দুই সেনার মুখে থাপ্পড় মারেন এবং সেই ভিডিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাইরাল হয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে সেনাদের ওপর হামলা, উসকানি দেয়া এবং ইসরায়েলি সেনাদের কাজে বাধা দেয়াসহ ১২টি অভিযোগ আনা হয়। ইসরায়েলি আদালত তাকে আট মাসের কারাদণ্ড দেয় এবং গত ২৯ জুলাই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
ইসরায়েলের সেনারা এর আগেও কয়েকবার অহেদ তামিমির পরিবারের সদস্যদের আটক করেছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আগ্রাসন রুখে দেয়ার জন্য তার বাবা ও ভাইকে আটক করা হয়। এছাড়া, ইসরায়েলি বাহিনী ২০১২ সালে অহেদ তামিমির চাচা রুশদি আত-তামিমিকে গুলি করে হত্যা করে।
১৯৯৩ সালে ইসরায়েলের পুলিশ অহেদ তামিমির ফুফু বাসিমা আত-তামিমিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ওইদিন বাসিমা তার ছেলের বিচারকার্য দেখার জন্য ইসরায়েলের আদালতে গিয়েছিলেন।