বিমসটেক সম্মেলনে শেখ হাসিনা-মোদী বৈঠক হতে পারে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

342

ঢাকা: সামিট অব দ্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার নেপাল যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর নেপাল সফর সামনে রেখে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্মেলন অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বিমসটিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে গ্রিড সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বাণিজ্য সম্প্রসারণে ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।

বিমসটেক সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো আলোচনা হবে কি না? – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমসটেক একটি আঞ্চলিক সংস্থা। এটি অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। তবে সেখানে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ তুললে তা আলোচনা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে। ওইদিন নেপালের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে বিমানটির নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল ও নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশরাফি বিনতে শামস বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। অভ্যর্থনা পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রীকে সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রা সহকারে হোটেল সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজায় নিয়ে যাওয়া হবে। দু’দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী সেখানে অবস্থান করবেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর হোটেল সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজায় সাতটি আঞ্চলিক দেশের নেতাদের নিয়ে চতুর্থ বিমসটেক সম্মেলন শুরু হবে। এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে একটি সেতুবন্ধ তৈরি করা।

সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী নেপালের রাষ্ট্রপতির বাসভবন শিতল নিবাসে দেশটির রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে নেপালের রাষ্ট্রপতির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী অন্য নেতাদের সঙ্গে সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজা হোটেলে চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দেবেন।

সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বাণিজের উন্নয়নের বিষয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের অলোচনার মূল বিষয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভুটান ও নেপালের নেতারা সম্মেলনে তাদের তিন বাহিনীর সম্মিলিত সামরিক অনুশীলন এবং একটি মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সইয়ের বিষয়েও মতবিনিময় করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্য নেতারা স্থানীয় হায়াৎ রিজেন্সি হোটেলে তাদের সম্মানে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলি আয়োজিত নৈশভোজেও যোগ দেবেন। শুক্রবার অপরাহ্নে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।

এই উপ-আঞ্চলিক সংস্থাটি ১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্যদিয়ে গঠিত হয়। এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ৫টি দক্ষিণ এশিয়ার। এগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা। এছাড়া দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড এর সদস্য।

Leave A Reply

Your email address will not be published.