কোন ষড়যন্ত্রই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়ন ব্যাহত করতে পারবে না : আইনমন্ত্রী

364

ঢাকা: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোন ষড়যন্ত্রই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন নস্যাৎ করতে পারবেনা।এখনো বিভিন্ন ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই দেশের মানুষের স্বার্থে সব সময় অবিচল। দেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে কোন ষড়যন্ত্রই তা ব্যহত করতে পারবেনা।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তানে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আজ এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ আইন সমিতি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সংগঠনটির সভাপতি মো কামরুজ্জামান আনসারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি সিনিয়র এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক আইনমন্ত্রী সিনিয়র এডভোকট আবদুল মতিন খসরু এমপি, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট শ.ম রেজাউল করিম, সুপ্রিমকোর্টের সাবেক সম্পাদক এস.এম মনির, সংগঠনটির জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওসার প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র আইনজীবীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

আনিসুল হক বলেন, যে দিন থেকে বঙ্গবন্ধু বুঝতে শিখেছেন সেদিন থেকেই বাংলার জনগনের স্বার্থে কথা বলা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বর্বরোচিত ও নির্মমভাবে হত্যার পর ২১ বছর বিচার করা যায়নি। ইনডেমনিটি করে তা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চেতনা ও স্বপ্ন বিষয় ভুলিয়ে রাখার বহু চেষ্টা হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনও নিজের নয় বাংলার জনগনের জন্য চিন্তা করতেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এজন্যই তখন তাকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা করতেন।

তিনি বলেন, ৭১’এর পরাজিত শক্তিই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠা করে তা উদ্ধোধন করেছিলেন। আর এ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্টে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারে ৭ জন বিচারপতি অপরাগতা প্রকাশ করেছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি ফাসিঁর আসামী মহিউদ্দিন রায়ের ২৫০০ দিন পরে হাইকোর্টে আপিলে এসেছিলো। তখন আমরা বলেছি এ আপিল গ্রহণ না করতে, তখন তৎকালীন বিচারপতি জয়নাল আবেদনীনের বেঞ্চ আমাদের আবেদন গ্রায্য করেনি। এতো বাধা বিপত্তি ও ষড়যন্ত্রের পরও আমরা রায় পেয়েছি। রায় আংশিক কার্যকর হয়েছে। অন্যদের রায়ও কার্যকর হবেই হবে।

বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার বলেন, বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ছাত্র ছিলেন আমিও এ অনুষদেরই একজন ছাত্র ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর জীবনই ছিলো সংগ্রাম। শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধু অবহেলিত মানুষ ও বাংলার মানুষের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত হন। বঙ্গবন্ধু জন্মগত ভাবেই নেতা ও দৃঢ়চেতা ছিলেন।

বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও সংগ্রামের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগারে থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেই দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। ওই বছরই বঙ্গবন্ধু সংবিধান উপহার দেন এবং সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠা করে নিজেই উদ্বোধন করেন। তিনি আইনের শাসন ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় ছিলেন।

এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, যার নেতৃত্ব ও সংগ্রামের ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাকে হত্যায় বিশ্ব স্তম্ভিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে যে ভাবমূর্তি এ দেশের মানুষ বিশ্বে অর্জন করেছিলো, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এর ওপর বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তিনি বলেন , বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এর বিচারে প্রতিবন্ধকতা স্বরূপ ইনডেমনিটি সহ দীর্ঘ সময় নানা ষড়যন্ত্র চলে। এছাড়াও জেল হত্যা, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা বিচারেও নানা ষড়যন্ত্র চলে। সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে এখন দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.