রাজধানীর ৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর এই ঘোষণা করা হয়।
দিনভর সংঘর্ষের পর সোমবার সন্ধ্যায় আফতাবনগর এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার মাসফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গল ও বুধবার (৭ ও ৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
পাশাপাশি ৯ থেকে ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামার সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যাবে।
বসুন্ধরা এলাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর প্রক্টর নাজমুল আহসান খান শিক্ষার্থীদের সামনে এনে ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে এখানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, আমরা (শিক্ষকরা) অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি তোমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। আমাদের সাথে পুলিশের সমঝোতা হয়েছে, তারা তোমাদের নিরাপদে ছেড়ে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কবে খোলা হবে তা ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট এবং তোমাদের মেইলে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের শান্ত করার জন্য প্রক্টর স্যার বন্ধের কথা বলেছিলেন। এখন পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত বা নোটিস দেওয়া হয়নি।’
মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ফয়জুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের ছুটি ঘোষণা করে সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের আসন্ন পরীক্ষায় বর্ধিত ছুটি হিসেবে এই ছুটি ঘোষণা করা হল।’
আগামী বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামার সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা জানিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই এ ছুটি দেওয়া হয়েছে।’
সোমবার রাজধানীতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে দেখা না গেলেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্যে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে বেলা পৌনে ১১টা থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে।
ইস্ট ওয়েস্টের পাশাপাশি বসুন্ধরার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (আইইউবি) ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) শিক্ষার্থী এবং শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীদের কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।
আর তেজগাঁওয়ের আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের পর পুলিশ ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের একজন একজন করে বের হতে বললে অনেকে ভেতরে আটকা পড়েন, তৈরি হয় আতঙ্ক।
এসব ঘটনায় সংবাদকর্মী, পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিকালে সংঘর্ষ থামার পরও প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।