মার্কিন দূতাবাসে এক দশক ধরে কাজ করেছিল রুশ গুপ্তচর

522

মস্কোতে মার্কিন দূতাবাস

মস্কোতে মার্কিন দূতাবাসে এক দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছিল এক নারী রুশ গুপ্তচর। পরবর্তীতে ধরা পড়লে গত বছর তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র কেড়ে নেওয়া হয়। সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে এমনটা বলা হয়েছে।

দূতাবাসে কর্মরত ওই রুশ গুপ্তচরের কাছে ‘সিক্রেট সার্ভিসের’ অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে ও ই-মেইলে প্রবেশাধিকার ছিল। ওই সুবিধা ব্যবহার করে সে সম্ভবত গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। সেসব তথ্যের মধ্যে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ডের সময়সূচীও থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আওতায় থাকা ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।

প্রথমে তার বিরুদ্ধে সন্দেহ জাগে ২০১৬ সালে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি নিয়মিত পরীক্ষার সময়। তখন আবিষ্কৃত হয়েছিল যে, ওই নারী নিয়মিতভাবে প্রধান রুশ গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস বা এফএসবি’র সদস্যদের সাথে অননুমোদিত বৈঠক করতো।

গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এফএসবি’র সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগই তার পরিচয় ফাঁস করে দেয়।
ওই গুপ্তচরের কাছে ‘সিক্রেট সার্ভিসের’ অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে ও ই-মেইলে প্রবেশাধিকার ছিল
এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থাও ওই গুপ্তচরের বিষয়টি অস্বীকার করেনি। তবে গুপ্তচর হিসেবে তার গুরুত্ব কমিয়ে জানিয়েছে যে, বৈদেশিক নাগরিক হিসেবে তার দায়িত্ব ছিল নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ সৃষ্টির বাইরে। কেননা, বৈদেশিক নাগরিকদের দায়িত্ব হচ্ছে, সীমিত আকারে অনুবাদক হিসেবে কাজ করে, ব্যাখ্যা করা, সাংস্কৃতিক নির্দেশনা দেওয়া, যোগাযোগ রক্ষা করা ও প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়া।

গার্ডিয়ান আরো জানায়, মার্কিন কংগ্রেসকে এই চরের বিষয়ে জানানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বিষয়টি বেশ কিছু প্রশ্ন তুলবে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ তদন্তকারী কমিটির কাছে বিষয়টি ব্যাপক গুরুত্ব বহন করবে।

এক সূত্র গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে, একটি সরকারি কমিটি এই গুপ্তচরের তথ্য হাতানোর বিষয়টি না জানানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্ত করবে।

সূত্র বলেছে, মার্কিন কংগ্রেস রুশ হ্যাকারদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। সম্ভাবনা রয়েছে যে, গোয়েন্দা সংস্থার অভ্যন্তরীণ ওই তথ্যচুরির থেকে তারা মার্কিন সিস্টেমে প্রবেশ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পেয়ে গিয়েছিল।

সূত্র আরো বলেছে, ওই গুপ্তচরের তথ্য চুরি ও শেয়ার করার বিষয়টি এই রহস্য আরো পরিষ্কার করতে পারে যে, কিভাবে রুশরা ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কার্যালয় হ্যাক করতে পেরেছিল।

গার্ডিয়ান ওই গুপ্তচরের নাম বা সে দূতাবাসে কি কাজ করতো সে বিষয় প্রকাশ করেনি। তবে তারা ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। তবে সে সাড়া দেয়নি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.