বাংলাদেশে শামীমাকে আনার সুযোগ নেই বলে মনে করেন বাবা

249

ঢাকা: ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া ‘আইএস বধূ’ শামীমা বেগমকে বাংলাদেশে আনতে আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তার বাবা আহমেদ আলী। তিনি বলছেন, ‘শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। তবে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দিয়ে তাকে ভুল সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।’

যুক্তরাজ্য প্রবাসী আহমেদ আলী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই গ্রামের বাসিন্দা। একই গ্রামের আসমা বেগমকে বিয়ে করে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলেন। সেখানে এ দম্পতির চার মেয়ে। এর মধ্যে

শামীমা বেগম সবার বড়। একপর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ১৯৯০ সালে দেশে চলে আসেন আহেমদ আলী। আবার বিয়ে করেন। বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। মাঝেমধ্যে কিছুদিনের জন্য যুক্তরাজ্যেও যান।

গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সুপ্রিমকোর্টের রায়ে শামীমাকে সিরিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সুপ্রিমকোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের দেওয়া রায়ে বলা হয়, শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারেন। তাই তার নাগরিকত্ব বাতিলে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত হবে না।

ওই রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে শামীমার বাবা আহমেদ আলী বলেন, ‘শামীমার সঙ্গে আমার এখন কোনো যোগাযোগ নেই। শামীমা যখন সিরিয়া যায়, তখন সে ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। বন্ধুদের প্ররোচনায় পড়ে সে ভুল করতে পারে। তাকে সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ দেওয়া দরকার ছিল। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল রাষ্ট্রের।’

আহমেদ আলী বলেন, ‘শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, তাই তাকে এ দেশে আনার জন্য আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই। যুক্তরাজ্যের আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে সুযোগ থাকলে আবারও আপিল করে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যেতে পারে।’ তবে এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। আহমেদ আলী বলেন, ‘আমার আরেক মেয়ে এ বিষয়ে মামলার খোঁজখবর রাখছে। আমি যুক্তরাজ্য থেকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছি। এসব বিষয়ে কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।’

পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এলাকার স্কুলছাত্রী শামীমা বেগম ২০১৫ সালে ১৫ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে সিরিয়ায় পালিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে এক আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করেন ও সংগঠনটিতে যোগ দেন। ইয়াগো-শামীমা দম্পতির তিনটি সন্তান হয়েছিল। পুষ্টিহীনতা ও অসুস্থতায় তারা অবশ্য মারা যায়।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ এক সাংবাদিক সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে শামীমার সাক্ষাৎ পান। তখন তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। এর পরই যুক্তরাজ্য সরকার শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করে। শুরু হয় আইনি লড়াই। সর্বশেষ যুক্তরাজ্যের সুপ্রিমকোর্ট শামীমার দেশে না ফেরার আদেশ দেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.