আজ থেকে কার্যকর সড়ক পরিবহন আইন, যে অপরাধে যে শাস্তি

254

ঢাকা: আজ শুক্রবার থেকে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকর হচ্ছে।

নতুন এ আইনে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৬ মাসের জেল অথবা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

আইনটি কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে সড়ক পরিবহন এবং মহাসড়ক বিভাগ থেকে ২২ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সড়ক পরিবহন এবং মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৪৭ নং আইন)-এর ধারা ১ এর উপধারা (২) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার ১ নভেম্বর তারিখে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করলো।

আইনে বলা হয়েছে, অষ্টম শ্রেণি পাস না করলে লাইসেন্স পাবেন না চালকরা। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে এক মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। আইনে সাধারণ চালকের বয়স আগের মতোই কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর। জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহারের জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। ফিটনেস চলে যাওয়ার পরেও মোটরযান ব্যবহার করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।

দুর্ঘটনার জন্য দণ্ডবিধি অনুযায়ী তিন রকমের বিধান রয়েছে। নরহ’ত্যা হলে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের সাজা হবে। খুন না হলে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে মৃত্যু ঘটালে ৩০৪ (বি) ধারা অনুযায়ী তিন বছরের কারাদণ্ড হবে। দুই গাড়ি পাল্লা দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটালে তিন বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় না পড়লেও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর জন্য আইনে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে আইনে। নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়ঃজ্যেষ্ঠ যাত্রীর জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

মদপান করে বা নেশাজতীয় দ্রব্য খেয়ে গাড়ি চালালে, সহকারীকে দিয়ে গাড়ি চালালে, উল্টো দিকে গাড়ি চালালে, নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য স্থানে গাড়ি থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, চালকছাড়া মোটরসাইকেল একজনের বেশি সহযাত্রী উঠালে, মোটরসাইকেলের চালক ও সহযাত্রীর হেলমেট না থাকলে, ছাদে যাত্রী বা পণ্য বহন, সড়ক বা ফুটপাতে গাড়ি সারানোর নামে যানবাহন রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, ফুটপাতের ওপর দিয়ে কোনো মোটরযান চলাচল করলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত বছরের রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ঢাকার নিরাপদ সড়কের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দোষী চালকদের শাস্তি দিতে ঢাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভের মধ্যে আইনটি আলোচনায় আসে। এরপরে অক্টোবরে আইনটি জাতীয় সংসদে পাশ হলেও মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে প্রয়োগ করা যাচ্ছিল না।

সম্প্রতি সচিবালয়ে এক সভায় মালিক-শ্রমিকেরা আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের জন্য দাবি জানায়। অপরদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, দুর্ঘটনার কারণে চালকদের গ্রেফতার করলে জামিনযোগ্য যেন না হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.