ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকা: ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার।
মামলার আসামি হলেন – কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখা প্রধান জিনাত আরা ও শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।
রাজধানীর পল্টন থানায় অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে এ মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলা নম্বর ১০।
পল্টন থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা সুজন তালুকদার মামলা দায়ের করার এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এসআই সুজন বলেন, পল্টন থানাসূত্রে জানা গেছে, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরাসহ তিন শিক্ষিকাকে আসামি করা হয়েছে।
অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর অভিযোগ, রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পান। মোবাইলে নকল করেছে-এমন অভিযোগে অরিত্রীকে সোমবার তার মা-বাবাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সোমবার স্কুলে গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের অপমান করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতে বলেন। পরে প্রিন্সিপালের কক্ষে গেলে তিনিও একই রকম আচরণ করেন।
এ সময় অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে বাসায় গিয়ে তিনি দেখেন, অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে।
অরিত্রীদের শান্তিনগরের বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসকেরা অরিত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে থেকে ওই স্কুলের ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে রাস্তায় নামে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষামন্ত্রী ছুটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।
ঘটনার জেরে শিক্ষার্থী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। একইসঙ্গে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শান্তি নগরের ২৩/২৪ বাসার একটি কক্ষ থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ফাইনাল পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় সে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ উঠে।